জাভা প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ তৈরির পেছনের গল্প

Posted on by

Categories:         

১৯৯৫ সালের ২৩ মে। ঝলমলে চমৎকার একটি দিন1। জন গেইজ (John Gage – ডিরেক্টর অব সান-মাইক্রোসিস্টেম) ও মার্ক অ্যান্ডারসেন (Marc Andreesen – নেটস্কেপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সহপ্রতিষ্ঠাতা) ঘোষণা দেন যে, জাভা টেকনোলজি মোটেই কোনো উপকথা নয়, বরং এটিই বাস্তবতা এবং এটি নেটস্কেপ নেভিগেটর (Netscape Navigator) এর সঙ্গে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে।

সে সময় জাভাতে কাজ করে এমন লোকের সংখ্যা ত্রিশেরও কম। তারা কখনোই চিন্তা করেনি তাদের এই টিম ভবিষ্যৎ পৃথিবীর প্রধানতম টেকনোলজি নির্ধারণ করতে যাচ্ছে। ২০০৪ সালের ৩ জানুয়ারি মার্স এক্সপ্লোরেশন রোভার (Mars Exploration Rover)2 মঙ্গল গ্রহের মাটিতে পা রাখে যার কন্ট্রোল সিস্টেম থেকে শুরু করে পৃথিবীর অধিকাংশ কনজুমার ইলেকট্রনিক্স, যেমন– কেবল সেট-টপ বক্স (STB), ভিসিআর (VCR), টোস্টার (Toaster), পিডিএ (PDA), স্মার্টফোনসহ প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডিভাইস3, ১০০% ব্লু-রে ডিস্ক প্লেয়ার জাভা রান করে।

চলুন একটু পেছনের ইতিহাস জেনে নেই।

তখন সি++ (C++) এর একচ্ছত্রাধিপত্য।

সান মাইক্রোসিস্টেমস (Sun Microsystems, Inc.) মূলত হার্ডওয়্যার কোম্পানি। ১৯৭২ থেকে ১৯৯১ সালের এই সময়টাতে কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের এক বিশাল বিপ্লব হয়। দ্রুত এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সব হার্ডওয়্যার অল্প দামে পাওয়া যাচ্ছে এবং সেই সঙ্গে জটিল সব সফটওয়্যারের চাহিদা দ্রুতই বেড়ে চলছে। ১৯৭২ সালে ডেনিস রিচি (Dennis Ritchie)4 সি প্রোগ্রামিং ভাষা তৈরি করেন। যদিও তখনো প্রোগ্রামারদের মধ্যে এটি সব থেকে জনপ্রিয়, তবে প্রোগ্রামারদের মধ্যে সি-এর স্ট্রাকচার্ড প্রোগ্রামিং কিছুটা ক্লান্তিকর মনে হতে শুরু করেছে। এর ফলশ্রুতিতে বিয়ার্ন স্ট্রাউসট্রাপ (Bjarne Stroustrup)5১৯৭৯ সালে ডেভেলপ করেন সি++ (C++) যা কিনা মূলত সি (C) এবং এর সঙ্গে বাড়তি কিছু। এটি অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং ধারণাকে পরিচিত করে তোলে। অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিংয়ের সুবিধা হচ্ছে একজন প্রোগ্রামার পুনর্ব্যবহারযোগ্য (reusable) কোড লিখতে পারে যেটা পরে অন্য কাজে পুনরায় ব্যবহার করা যায়।

১৯৯০ সাল।

সান মাইক্রাসিস্টেমসে সি++ এর আধিপত্যে সি-তে লেখা বিভিন্ন টুল এবং এপিআইগুলো প্রায় অচল হতে শুরু করেছে। প্যাট্রিক নটন (Patrick Naughton) যিনি সান মাইক্রোসিস্টেমের একজন ইঞ্জিনিয়ার, মোটামুটি হতাশ এবং এক ধরনের বিশ্রী পরিস্থিতির সম্মুখীন। ততদিনে স্টিভ জবস (Steve Jobs)6 অ্যাপল কম্পিউটার থেকে বিতাড়িত হয়ে নেক্সট কম্পিউটার ইনকরপোরেটেড (NeXT Computer Inc.) প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন, যা পরবর্তীতে সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে এবং যার ফলশ্রুতিতে তৈরি হয়েছে আজকের ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম (OS X)। তার এই নতুন প্রতিষ্ঠান নেক্সটস্টেপ (NeXTSTEP) নামে একটি অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করে। এতে চমৎকার কিছু ব্যাপার ছিল। যার মধ্যে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড অ্যাপ্লিকেশন লেয়ারের ধারণাটি ছিল অসাধারণ। এতে অবজেক্ট ধরে ধরে কাস্টমাইজড সফটওয়্যার তৈরি করে ফেলা যায়। প্যাট্রিক নটন (Patrick Naughton) ইতিমধ্যে NeXT এর দিকে যাওয়ার জন্য মনস্থির করে ফেলেছেন। ঠিক তখনই একবার তাকে শেষ সুযোগ হিসেবে একটি অতি গোপন প্রজেক্টের (Stealth Project) অনুমোদন দেওয়া হয় যার কথা অন্য কেউ জানত না। কিছুদিন পরেই তার সঙ্গে যুক্ত হন জেমস গসলিং (James Gosling)7এবং মাইক শেরিডান (Mike Sheridan)। তখন এর নাম দেওয়া হয় গ্রিন প্রজেক্ট (Green Project)। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্রিন প্রজেক্টের দন্তোদ্গম হয়। তারা ধীরে ধীরে কম্পিউটার ছাড়াও আরও অন্যান্য ডিভাইস নিয়েও চিন্তাভাবনা শুরু করেন।

এর মধ্যে ১৩ জন কর্মীর এই গ্রিন প্রজেক্টের দল ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কের সেন্ড হিল রোডের একটি ছোট্ট অফিসে কাজ করতে থাকেন। এই দলকে পরবর্তীতে গ্রিন টিম নাম দেওয়া হয়। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য সি++ (C++) এর একটি ভালো ভার্সন তৈরি করা যা হবে অনেক দ্রুতগামী এবং রেসপন্সিভ (responsive)। সেই সময়ে কম্পিউটার ছাড়াও কনজুমার ইলেকট্রনিক্স যেমন – পিডিএ, কেবল সেট-টপ বক্স ইত্যাদির চাহিদা বেশ বেড়ে গেছে। একদল ইঞ্জিনিয়ার এক সঙ্গে থাকলে যা হয়, তারা নানা রকম জিনিস নিয়ে চিন্তা করতে থাকে, নানা রকম আইডিয়া তৈরি হয়, তা থেকে প্রোটোটাইপ (Prototype) তৈরি করতে থাকে। এর মধ্যে জেমস গসলিং সি++ প্রোগ্রামিং ভাষায় বেশ কিছু বাড়তি জিনিস যুক্ত করতে থাকেন এবং কিছু কিছু জিনিস ফেলে দেন। তিনি এর নাম দেন সি++ ++ — (C++ ++ –)। এখানে বাড়তি ++ মানে হচ্ছে নতুন জিনিস যোগ করা এবং – – মানে হচ্ছে কিছু জিনিস ফেলে দেওয়া।

জেমস গসলিংয়ের জানালা দিয়ে একটি ওক গাছ দেখা যায়। একদিন তিনি অফিস থেকে বের হয়ে ওই গাছটির নিচে দাঁড়ান এবং সঙ্গে সঙ্গে C++ ++ — নাম পরিবর্তন করার সিন্ধান্ত নেন এবং নতুন নাম দেন ওক (Oak)।

একই সময় সানের ইঞ্জিনিয়াররা মিলে এম্বেডেড সিস্টেম (Embeded System) নিয়েও কাজ করতে থাকেন এবং এসময় তারা নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হন। এম্বেডেড সিস্টেমে মেমোরি কম থাকে, প্রসেসিং ক্ষমতাও কম থাকে। এই সিস্টেমে সি++ (যা কিনা কম্পিউটারের মতো বড় ফুটপ্রিন্টের হার্ডওয়্যারের জন্য ডিজাইন করা) চালাতে গিয়ে তারা অদ্ভুত অদ্ভুত সমস্যার সম্মুখীন হতে থাকেন। এইসব সমস্যার সমাধান করার জন্য গ্রিন টিম নানা রকম চিন্তাভাবনা করতে থাকে। এই সময়েই মানুষ পিডিএ, কেবল সেট-টপ বক্সগুলোর মরণদশা দেখতে শুরু করে। জেমস গসলিং যদিও ওক নিয়ে যথেষ্ট এগিয়েছেন কিন্তু এটি কোনোভাবেই এদেরকে সাহায্য করতে পারছিল না। সবার কাছে মনে হতে থাকে একমাত্র কোনো একটি অলৌকিক ঘটনাই পারে এই প্রজেক্ট সফল করতে। ঠিক তখনই সেই প্রতীক্ষিত প্রত্যাশা আলোর মুখ দেখা যায়। জেমস গসলিং আউট অব দ্য বক্স (out of the box)একটি যুগান্তকারী ধারণা নিয়ে আসেন। সেটি হলো ভার্চুয়াল মেশিন (Virtual Machine)। অর্থাৎ আমরা একটি কাল্পনিক মেশিনের জন্য কোড লিখব যা কম্পাইল হয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন কোড (Intermediate Code) তৈরি করবে। জাভা ভার্চুয়াল মেশিন সেই অন্তর্বর্তীকালীন কোডকে রানটাইমে আসল ডিভাইসের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী মেশিন কোড তৈরি করবে।

ঠিক একই সময়েই ন্যাশনাল সেন্টার ফর সুপারকম্পিউটিং অ্যাপ্লিকেশনস (National Center for Supercomputing Applications – NCSA) একটি কমার্শিয়াল ওয়েব ব্রাউজার বের করে। তাদের টিম ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে শুরু করে। তারা একটি নতুন ধারণা নিয়ে আসে সেটি হলো, এক ধরনের ছোট ছোট প্রোগ্রাম যা ওয়েব ব্রাউজারের মধ্যে চলবে। তারা এর নাম দেয় অ্যাপলেট (Applet)। তারা অ্যাপলেটের জন্য কিছু মানদণ্ড (standard) ঠিক করে দেয়,
এটি হতে হবে খুব ছোট, খুব সহজ ও সাধারণ,
এর স্ট্যান্ডার্ড এপিআই (Standard API) থাকতে হবে,
এটি হবে প্ল্যাটফর্ম ইনডিপেন্ডেন্ট (Platform Independent, অর্থাৎ সব ধরনের অপারেটিং সিস্টেমে চলবে),
একে ওয়েব ব্রাউজারে এম্বেড করা যাবে,
এর মাধ্যমে মাল্টিটাস্কিং (Multitasking) করা যাবে,
এতে হার্ডওয়ারের সরাসরি মেমোরি ম্যানিপুলেশন (Memory Manipulation) করা যাবে না, এবং
আউট-অব-দ্য-বক্স নেটওয়ার্ক প্রোগ্রামিং করা যাবে।

তারা তখনকার সময়ের ইন্টারনেট বাবলকে (Internet bubble) উদ্দেশ্য করে পরবর্তী প্রজন্মের পণ্য (next generation product) তৈরি করতে চেয়েছিল। এই প্রজেক্টের কার্টুন নাম ছিল Duke (যা এখন আমরা জাভার মাস্কট হিসেবে চিনি)। পরবর্তীতে তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে এম্বেডেড সিস্টেমের সমস্যার সমাধানটি তারা ওয়েব ব্রাউজারের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করবে।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এর কোনোকিছুই ঠিকঠাক মতো সি++ দিয়ে করা যাচ্ছিল না। সেই সময়ে ওয়েব ব্রাউজারে শুধুমাত্র স্ট্যাটিক পেইজে (Static Page) লেখা আর ছবি ছাড়া অন্য কিছু দেখাবার ব্যবস্থা ছিল না। এই অ্যাপলেট টেকনোলজি ব্যবহার করায় ব্রাউজার অ্যানিমেশন (Browser Animation) তৈরি করা যাবে। পেইজ হবে ইন্টারঅ্যাকটিভ (Interactive)। অ্যাপলেটের এই বৈশিষ্ট্যগুলো সবার নজর কাড়ে যা কিনা জাভা প্রোগ্রামিং ভাষার সফলতার মূল কারণ।

জেমস গসলিংয়ের এই ভার্চুয়াল মেশিনের সমাধানটি ছিল প্রকৃতপক্ষেই যুগান্তকারী (কেন যুগান্তকারী তা নিয়ে পরবর্তীতে এই বইয়ে আলোচনা করা হবে)। ইতিমধ্যে গ্রিন টিম ওকের প্রথম রিলিজ দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়। ঠিক তখনই এক নতুন সমস্যার উদ্ভব হয়। আইনজীবীরা এসে জানায় যে, এর নাম ওক রাখা যাবে না। কারণ ইতিমধ্যেই এই নামটি ওক টেকনোলজিস (Oak Technologies) এর ট্রেডমার্ক। এর অর্থ এই যে, এর নাম পরিবর্তন করে অন্য নাম রাখতে হবে। শুরু হয় নানরকম চিন্তাভাবনার (brainstorming)। কিন্তু কোনোভাবেই একটি ভালো নাম নির্বাচন করা যাচ্ছিল না। অনেকেই অনেক ধরনের নাম উপস্থাপন করেন, যেমন- DNA, Silk, Ruby, yuck, Lyric, Pepper, NetProse, Neon, Java ইত্যাদি। এই সবগুলো নাম লিগ্যাল ডিপার্টমেন্টে সাবমিট করার পর মাত্র Java, DNA ও Silk এই তিনটি নাম ফিরে আসে যেগুলো কিনা ব্যবহার করা যাবে। নাম নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মিটিং চলতে থাকে। এর মধ্যে ক্রিস ওয়ার্থ (Chris Warth), জাভা (Java) নামটি ব্যবহার করার প্রস্তাব করেন, কারণ তখন তার হাতে ছিল এক কাপ গরম Peet’s Java (কফি)8। শেষপর্যন্ত অনেক চিন্তাভাবনার পর এর নাম ঠিক করা হয় জাভা। কারণ একমাত্র এই নামেই সব থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছিল। তাছাড়া কফি পান করার পর সবারই মন চনমনে হয়ে যায়।

জাভা এমন একটি প্রোগ্রামিং ভাষা যা কিনা তখন সবার মনকেই চাঙা করে দিয়েছিল।

১৯৯৫ সালের মে মাসে জাভার প্রথম পাবলিক ভার্সন রিলিজ হয়।

এর পরের ইতিহাস আমরা সবাই জানি। জাভা হচ্ছে পৃথিবী নামক গ্রহের সবচেয়ে সফল এবং জনপ্রিয় প্রোগ্রামিংয়ের ভাষা।

পাদটীকা

1 দিনটি চমৎকার ছিল কিনা এ বিষয়ে আমার ধারণা নেই, তবে ধরে নিচ্ছি এটি একটি চমৎকার দিন ছিল।
2 http://soa.sys-con.com/node/39220/mobile
3 https://go.java/index.html
4 Dennis Ritchie (September 9, 1941 – October 12, 2011) আমেরিকান কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও সি প্রোগ্রামিং ভাষা এবং Unix অপারেটিং সিস্টেমের প্রণেতা।
5 Bjarne Stroustrup, ডেনমার্কের কম্পিউটার বিজ্ঞানী, সি++ প্রোগ্রামিং ভাষার প্রণেতা।
6 Steven Paul “Steve” Jobs – বিখ্যাত আইফোন প্রস্তুতকারী কোম্পানি অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO)
7 James Gosling – জাভা প্রোগ্রামিং ভাষার স্রষ্টা (Father)।
8 http://www.javaworld.com/article/2077265/core-java/so-why-did-they-decide-to-call-it-java-.html

   

Share on:

Author: A N M Bazlur Rahman

Java Champion | Software Engineer | JUG Leader | Book Author | InfoQ & Foojay.IO Editor | Jakarta EE Ambassadors| Helping Java Developers to improve their coding & collaboration skills so that they can meet great people & collaborate

100daysofcode 100daysofjava access advance-java agile algorithm arraylist article bangla-book becoming-expert biginteger book calculator checked checked-exceptions cloning code-readability code-review coding coding-convention collection-framework compact-strings completablefuture concatenation concurrency concurrentmodificationexception concurrentskiplistmap counting countingcollections critical-section daemon-thread data-race data-structure datetime day002 deliberate-practice deserialization design-pattern developers duration execute-around executors export fibonacci file file-copy fork/join-common-pool functional future-java-developers groupby hash-function hashmap history history-of-java how-java-performs-better how-java-works http-client image import inspiration io itext-pdf java java-10 java-11 java-17 java-8 java-9 java-developers java-performance java-programming java-thread java-thread-programming java11 java16 java8 lambda-expression learning learning-and-development linkedlist list local-type-inference localdatetime map methodology microservices nio non-blockingio null-pointer-exception object-cloning optional packaging parallel pass-by-reference pass-by-value pdf performance prime-number programming project-loom race-condition readable-code record refactoring review scheduler scrum serialization serversocket simple-calculator socket software-development softwarearchitecture softwareengineering sorting source-code stack string string-pool stringbuilder swing thread threads tutorial unchecked vector virtual-thread volatile why-java zoneid